নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী ট্যাব কেনার ১০,০০০ টাকা ফেরত দিতে হবে ?

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের স্মার্টফোন বা ট্যাব কেনার জন্য ১০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন । আর এই ঘোষণা কথা মাথায় রেখেই,রাজ্য সরকারের তরফে বারংবারই ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য  বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প থেকে শুরু করে স্কলারশিপ কার্যকরী করা হয়ে হয়েছিল । তাই পশ্চিমবঙ্গের সরকারের তরফে কার্যকরী হওয়া সমস্ত প্রকল্পের মধ্যে যে প্রকল্পটি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা হলো তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প। 

রাজ্য সরকারের তরফে সমাজে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্যই এই প্রকল্প নিয়ে আসা হয়, যাতে সেই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদানের জন্য মোবাইল অথবা ট্যাব কেনার ক্ষেত্রে ১০, ০০০ টাকা করে দেওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ করে অতিমারির সময়ে যখন অফলাইনে পড়াশোনা করা যাচ্ছিল না সেই সময়ে যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন এরকম পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে সেই টাকা সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে।

আর এই কারণেই উপর মহলে হচ্ছে প্রধান সমস্যা। করোনা মহামারীর সময় থেকেই অনলাইনে পড়াশোনা করার জন্য প্রতিটি উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব তুলে দেওয়া হয়েছিল। তার জন্য সরকারের তরফে পড়ুয়াদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এবার সেই প্রকল্পে সরকারের নজরদারি করার পর জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে স্মার্টফোন বা ট্যাব কেনার জন্য যে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল সরকার, সেখানে বহু ছাত্র-ছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে এই টাকা দুইবার অর্থাৎ ২০ হাজার টাকা ঢুকে গিয়েছে।

 পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের তরফে যেসকল ছাত্র-ছাত্রীরা দু’বার টাকা পেয়েছেন তাদের চিহ্নিত করা গেলেও, ওই টাকার মধ্যে কতো টাকা ফেরত পাওয়া গেছে তা নিয়ে কোনোরূপ স্পষ্ট উত্তর মেলেনি নবান্নের তরফে। এক প্রশাসনিক কর্তার তরফে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে যে, দ্বাদশ শ্রেণীর অনেক শিক্ষার্থীই ট্যাবের টাকার জন্য বাংলা শিক্ষা পোর্টালের পাশাপাশি তাদের নিজস্ব স্কুলের বৃত্তিমূলক পোর্টালেও আবেদন জানিয়েছিলেন। আর যার কারণেই তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দু’বার তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের টাকা পৌঁছে গিয়েছে। আর তাতেই রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনিক কর্তারা।

পরবর্তীতে যাতে এইরকম ভুল যাতে আর কোনোভাবেই না হয় তার জন্য, টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক হয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এর পাশাপাশি আর ইতিমধ্যেই এর পাশাপাশি নবান্নের তরফেও জানানো হয়েছে যে, কোনোভাবে যদি দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দু’বার টাকা ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে, বা একাউন্টে টাকা দু’বার ট্রান্সফার হয়ে থাকে তহলে ওই টাকার অর্ধেক যাতে ফেরত পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে টাকা ফেরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। সমস্ত স্কুলগুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে তারা এ বিষয়টির দিকে বিশেষভাবে নজরদারী করেন এবং কোনোভাবেই যদি কোনো ছাত্র অথবা ছাত্রীর অ্যাকাউন্টে দু’বার টাকা ট্রান্সফার করা হয় তবে সেটি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 

এমনিতেই উচ্চমাধ্যমিকের সকল পড়ুয়াদের এই টাকা দেওয়া নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে, তাই উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের হাতে এই টাকা তুলে দিয়ে অভিভাবকদের নিজেদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করছে সরকার। আবার সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজ্যের কোষাগারে অর্থাভাব চলছে। সেখানে এইভাবে সমস্ত পড়ুয়াদের এত টাকা দেওয়ার কোনো অর্থ নেই। যেখানে অতিমারি যথেষ্ট কমে গিয়েছে। অফলাইনে স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। সেখানে এই টাকা দেওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

Leave a Comment